সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ঔরঙ্গজেবের আমলে শিখ বিদ্রোহের

 



ভক্তিবাদী আন্দোলনের সাধক গুরু নানককে কেন্দ্র করে পাঞ্জাবে শিখ সম্প্রদায়ের উদ্ভব ঘটে তিনি একেশ্বরবাদী গণতন্ত্রমুখী আন্দোলন শুরু করেছিলেন গুরু নানকের পরবর্তী সময়ে গুরুদের সঙ্গে আকবরের সুসম্পর্ক ছিল কিন্তু জাহাঙ্গীরের সময় থেকে মুঘলদের সঙ্গে শিখ গুরুদেব সংঘর্ষের সূচনা হয় জাহাঙ্গীরের পুত্র খসরুর সঙ্গে পঞ্চম শিখ গুরু অর্জুন সিংহের মধুর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি ক্ষুব্ধ হন তিনি মনে করেন এই শিখ গুরু তাঁর পুত্র খসরুকে পিতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহে প্ররোচিত করছে এর পাশাপাশি শিখ জাতির শৃঙ্খলা ও সংগঠন দেখে জাহাঙ্গীর অসন্তুষ্ট হন জাহাঙ্গীর গুরু অর্জুনকে দরবারে ডেকে পাঠান দুই লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করেন গুরু অর্জুন জানায় যে তিনি নিরপরাধ এবং নিঃস্ব, শিখ সঙ্গতের সম্পত্তির তত্ত্বাবধক মাত্র তাই তিনি আর্থিক জরিমানা দিতে নৈতিক আর্থিকভাবে অপারক ক্ষুব্দ জাহাঙ্গীর গুরু অর্জুনের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেন শিখ গুরুর এহেন নৃশংস এবং প্রায় বিনা বিচারে প্রাণ দণ্ডের ঘটনা শিখ মুঘল সম্পর্কের একটি স্থায়ী আঁচড় কেটে দিয়েছিল। শাহজাহানের শাসনকালের প্রাথমিক পর্বে গুরু হরগোবিন্দের সঙ্গে মুঘল সৈন্যদের কয়েকটি সংঘর্ষ হয় পরবর্তী মুঘল শাসক ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে শিখদের সংঘর্ষের ক্ষেত্রে কোন ব্যতিক্রম ঘটেনি

ঔরঙ্গজেব যখন সিংহাসনে বসেন তখন শিখ গুরু ছিলেন হররায় বা হরগোবিন্দ তিনি একটি ক্ষুদ্র শিখ বাহিনী তৈরি করেন এবং মুঘলদের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখেন কিন্তু দারাশিকোর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার ফলে ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে তাঁর বিরোধ বাধে জাহাঙ্গীরের সময় যেমন খসরুকে গুরু অর্জুন নৈতিক ও আর্থিক সাহায্য করেছে বলে মনে করা হয়েছিল, ঠিক তেমনি ভাবে গুরু হরগোবিন্দ দারাশিকোকে সাহায্য করছেন বলে মনে করা হয় বলাবাহুল্য যে দারাশিকোকে আশীর্বাদ করে গুরু হরকৃষেণ বলেছিলেন তিনি অলৌকিক ক্ষমতার সাহায্যে ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্মমত তৈরি করে দেবেন ঔরঙ্গজেব প্রাথমিকভাবে নরম মনোভাবের পরিচয় দেন তিনি হরেকৃষকে ডেকে পাঠান দরবারে কিন্তু হরকৃষেণ স্বশরীরে উপস্থিত না হয়ে তাঁর পুত্র রাম রাইকে পাঠান। রঙ্গজেব রামরাইকে দিল্লিতে আটকে রেখে শেখ গুরুদের মুঘল প্রভাবের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন, যাতে ভবিষ্যতে শিখ মুল সংঘর্ষ কম হতে পারে কিন্তু মুঘল দরবারে রামরাই এর আচার-ব্যবহার রঙ্গজেবকে খুব্ধ করে পরবর্তী গুরু তেগবাহাদুরের কার্যকলাপ ঔরঙ্গজেবকে শিখদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে পরোচিত করে

 হর কিষেণের পর নবম গুরু তেগবাহাদুর (১৬৬৪-৭৫) গুরু পদে আসীন হন তাঁর তেজস্বীতা, শিখ সংগঠনকে মজবুত করার বাসনা রঙ্গজেবকে খুব্ধ করে। এর পাশাপাশি অম্বরের রানা রাম সিংয়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে গুরু তেগবাহাদুর আসাম অভিযানে অংশগ্রহণ করেন তিনি ঔরঙ্গজেবের ধর্মান্ধ নীতি ও জিজিয়া কর স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন তিনি কাশ্মীরের ব্রাহ্মণদের ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে পরোচনা দেন। তেবাহাদুরের নেতৃত্বে শিখদের স্বাধীন চেতনা এবং রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিদ্রোহের পরামর্শ, মুসলিমদের শিখধর্ম গ্রহণে উৎসাহদান বিভিন্ন অভিযোগে তাঁকে বন্দী করে দিল্লিতে আনা হয় ঔরঙ্গজেব তেগবাহাদুরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে নয় মৃত্যুবরণ করার আদেশ দেন শিখ গুরু দ্বিতীয় পথটি অর্থাৎ মৃত্যুকে বেছে নেন৭৫ খ্রিস্টাব্দে নভেম্বর মাসে গুরু তেগবাহাদুরকে হত্যা করা হয় বাদশা গুরুর লেখা মন্ত্রটি খুলে দেখেন তাতে লেখা আছে 'শির দিয়া, সার না দিয়া' অর্থাৎ মস্তক দিয়েছি কিন্তু গৃঢ় তত্ত্ব দিইনি। তেগবাহাদুরের মৃত্যু শিখ সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন প্রেরণা আনে

 ঔরঙ্গজেবের সময় থেকে শিখ মুল সংঘাত নতুন একটা মাত্রা লাভ করে শিখ গুরুর প্রাণদণ্ডকে কেন্দ্র করে শিখ মুঘল সংঘর্ষ হয়েছে কিন্তু নিছক ধর্মীয় কারণে শিখ গুরুর হত্যাকাণ্ড ঔরঙ্গজেবের সময়ে প্রথম ঘটে, ফলে ধর্মীয় প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিখ সম্প্রদায়ের মুঘল বিরূপতা নতুন প্রাণ শক্তি পায় মুঘল সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে গৃহ ত্যাগের প্রাক্কালে তেবাহাদুর হরগোবিন্দের তরবারি পুত্র গোবিন্দকে অর্পণ করে তাঁকেই শিখ গুরু পদে অভিষিক্ত করেন যাত্রাকালে তিনি পুত্রের উদ্দেশ্যে বলেন যে প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসাই পুত্রের একমাত্র কর্তব্য কার্য কানিংহাম লিখেছেন যে, পিতার প্রাণদণ্ড এবং স্বদেশের শোচনীয় অবস্থায় বিষয়ে চিন্তা করে তিনি মুসলমানদের চির শত্রুতে পরিণত হলেন, বিধ্বস্ত হিন্দু দিগকে একটি নতুন বিজীগিষু জাতিতে পরিণত করার মহৎ কল্পনায় অনুপ্রাণিত হলেন

তেগবাহাদুরের মৃত্যুর পর প্রায় কুড়ি বছর গুরু গোবিন্দ যমুনার নিম্ন পার্বত্য প্রদেশে অজ্ঞাতবাসে কাটান পাঞ্জাবের পার্বত্য অঞ্চলে শিখ রাজ্য স্থাপনের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেন তিনি লিখেছেন যে 'সমস্ত প্রকার উৎপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আযুধ হিসেবে নিয়োজিত হবার আদর্শ থাকলেও খালসার আর একটি আদর্শ ছিল একটি গুরু শাসিত রাজ্যের প্রতিষ্ঠা' তিনি একটি ছোট সেনাদল গঠন করেন নাহানের রাজা এই সেনাদল কিছুদিন ব্যবহার করেছিলেন ১৬৯৯ খ্রিস্টাব্দে গুরু গোবিন্দ আনন্দপুর খালসার প্রবর্তন করেন তিনি উপলব্ধি করেন যে, মুঘল কর্তৃত্ব থেকে কিছুটা দূরে এবং দুর্গম প্রদেশে অবস্থান করে মুঘল বিরোধী কার্যকলাপ পরিচালনা করা সহজ হবে তাই তিনি শতদ্রু ও যমুনা নদীর মধ্যবর্তী পর্বতশ্রেণীর পাদদেশে দুর্গ নির্মাণ করেন এইরূপ তিনটি প্রধান দুর্গ হল আনন্দপুর, পাওনাটা এবং চামকৌর তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে দুর্গম পার্বত্য শ্রেণীর মধ্যে ক্রমান্বয়ে আধিপত্য স্থাপিত হলে তাতে মুঘল শাসনের উচ্ছেদ সাধন করা সম্ভব হবে কিন্তু পার্বত্য রাজারা গুরু গোবিন্দ সিংহের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হয়ে মুঘলদের সাহায্য প্রার্থনা করে

গুরু গোবিন্দের সাফল্যে মুসলমানদের মনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয় ঔরঙ্গজেব লাহোর ও সরহিন্দের মুঘল শাসকদের গুরু গোবিন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার নির্দেশ দেন মুঘল সেনারা আনন্দপুর আক্রমণ করে কিন্তু শিখরা বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করে আক্রমণ প্রতিহত করতে সমর্থ হয় মুঘল সেনা ও মিত্র শক্তি আনন্দপুর দুর্গ অবরোধ করে সংঘর্ষে গুরুর দুই পুত্রের মৃত্যু হয়, অধিকাংশ শিখ  সেনা নিহত হয় গুরু গোবিন্দ সিংহ ছদ্মবেশে ভাতিন্দ্রায় পালিয়ে যান সেখান থেকে এসে হানসি ও ফিরোজপুরের মধ্যবর্তী দমদমা নামক স্থানে বসবাস শুরু করেন এবং পুনরায় খালসা বাহিনীকে সংগঠিত করেন অতঃপর ঔরঙ্গজেব দূত মারফত তাঁকে বাদশাহের সাথে সাক্ষাত করার আহ্বান জানান ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে গুরু গোবিন্দ সিংহ রঙ্গজেবের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য দাক্ষিণাত্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন কিন্তু পথেই তিনি বাদশার মৃত্যু সংবাদ পান। পরবর্তী বাদশা বাহাদুর শাহর আমন্ত্রণে গোবিন্দ সিংহ দাক্ষিণাত্য রাজপুতানা অভিযানে সাহায্য করেন ১৭০৮ খ্রিস্টাব্দে আফগান আততায়ীর ছুরিকাঘাতে গুরু গোবিন্দ সিং এর মৃত্যু হয়

যদুনাথ সরকারের মতে ঔরঙ্গজেবের শিব গুরুর ক্ষমতা ও শিখপন্থের ঐক্য ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছিল। এরপরও শিখপন্থের অস্তিত্ব ছিল। মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই ও অব্যাহত ছিল, কিন্তু তাতে 'জাতীয় ঐক্যের কোনো ছাপ ছিল না। শিখরা জাতীয় চেতনা ও ঐক্যবোধ দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে মুঘল বিরোধী যে লড়াই চালিয়ে ছিল এখন তা অবশিষ্ট ছিল না বিশৃঙ্খলা, লুঠেরা হিসেবেই শিখদের লড়াই কোনক্রমে টিকে ছিল অধ্যাপক সতীশচন্দ্র মতে সাধারণভাবে দেখলে জাট অভ্যুত্থান বা শিখদের স্বতন্ত্র রাজ্য স্থাপনের চেষ্টা মুঘল সাম্রাজ্যের পক্ষে সমূহ বিপদের সূচনা করার মত যথেষ্ট বিপদজনক ছিল না কিন্তু এগুলি বিভিন্ন শ্রেণী ও সম্প্রদায়ের প্রতিরোধ ও সবল আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই সফল আন্দোলন মুঘল সাম্রাজ্যের মর্যাদার পক্ষে যেমন হানিকর ছিল তেমনি বিচ্ছিন্নতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পক্ষে ছিল যথেষ্ট

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

পল্লব যুগের শিল্প ও স্থাপত্য

  খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে নবম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত সময়কাল বিন্ধ্যর দক্ষিনে উপদ্বীপীয় ভারতের তিনটি শক্তির সহাবস্থান লক্ষ করা যায় - দাক্ষিণাত্যে বাদামীর চালুক্য বংশ , সুদূর দক্ষিনে কাঞ্চিপুরমের পল্লববংশ এবং আরো দক্ষিনে মাদুরাইয়ের পান্ড্যবংশ। দক্ষিণ ভারতের উপর রাজনৈতিক কর্তৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়ে এই তিনটি শক্তি পরস্পর বিরোধী রাজনৈতিক সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল । তথাপি এই তিনশ বছরের কালপর্বে দক্ষিণ ভারতীয় সংস্কৃতির এক অসামান্য বিকাশ ঘটেছিল আলবার , নয় নারদের ভক্তি আন্দোলনের দ্বারা হিন্দু ধর্মের পুনর্জাগরণ ঘটেছিল এবং এই ধর্মীয় পুনর্জাগরনের আবর্তে স্থাপত্য ভাস্কর্য চিত্রশিল্পী ও গান-বাজনার জগত দারুণভাবে আলোড়িত হয়েছিল । এই সাংস্কৃতিক আলোড়নে পল্লবদের ভূমিকা ছিল অসীম । পল্লব স্থাপত্য ও ভাস্কর্য দক্ষিণ ভারতীয় শৈলীর এক অসামান্য দৃষ্টান্ত । পল্লব রাজত্বকালেই দক্ষিণ ভারতের প্রথাগত পাহাড় কেটে মন্দির নির্মাণ শিল্প পরিত্যক্ত হয় এবং নতুনভাবে তৈরি কাঠামো যুক্ত মন্দির নির্মাণ শুরু হয় । পল্লব রাজ মহেন্দ্রবর্মনেরর রাজত্বকালে পাহাড় বা পাথর কেটে বেশ কয়েকটি...

দিল্লি সুলতানি কি ধর্মাশ্রয়ী ছিল ?

  দিল্লির সুলতানি রাষ্ট্র ইসলাম ধ র্মাশ্রয়ী ছিল কিনা , এটি একটি বিতর্কিত প্রশ্ন । জিয়াউদ্দিন বার নী র মতো সমসাময়িক ঐতিহাসিক সুলতানি রাষ্ট্রকে ' জাহানদারী ' বলে অভিহিত করেছেন অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালিত হত রাষ্ট্রবি দ্‌ দের চিন্তা ও রাষ্ট্রের পার্থিব প্রয়োজনের ভিত্তিতে ।   কিন্তু আধুনিক ঐতিহাসিকগণ এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত । একটি ইসলামীয় রাষ্ট্রের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয় । প্রথমত , রাষ্ট্র কোরানে র ভিত্তিতে রচিত আইন বিধি শ রি য়ত মেনে চলতে বাধ্য হত। দ্বিতীয়ত , সব ইসলামীয় রাষ্ট্র ধর্মগুরু খলিফার সার্বভৌম শাসনের অধীন । ফলে সুলতা নগণ কখনও সার্বভৌম ক্ষমতা দাবি করতে পারেন না , তাঁরা খলিফার আজ্ঞাবহ । তৃতীয়ত , ইসলামী য় রাষ্ট্রের অন্যতম ভিত্তি হল ' মিল্লাত ' অর্থাৎ মুসলমান জনসাধারণের সৌভ্রাতৃত্ববোধ । ইসলামীয় রাষ্ট্রচিন্তায় এই তিন বৈশিষ্ট্যকে মৌলিক ও অভিন্ন বলে মনে করা হত ।   ধ র্মা শ্র য়ী রাষ্ট্রের স্বপক্ষে বক্তব্য : ঈশ্বরীপ্রসাদ , রমেশ চন্দ্র মজুমদার , আশীর্বাদিলাল শ্রীবাস্তব , শ্রী রাম শর্মার মতো ঐতিহাসিক দিল্লির সুলতানকে ইসলাম ধর্মাশ্রয়ী রাষ্ট্র হ...

মার্টিন লুথারের ৯৫ থিসিস

    মার্টিন লুথার ছিলেন লুথা রিয়ান মতবাদের প্রবক্তা । জার্মানির স্যাক্সসনিতে ইসলিবেন নামে একটি গ্রামে ১৪৮৩ খ্রিস্টাব্দে মার্টিন লুথারের জন্ম হয় । ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দে ইউটে ম বা র্গ চা র্চে র দরজায় তিনি তাঁ র ৯৫ তত্ত্ব ঝু লিয়ে দেন । এটি ছিল পোপের স্বর্গীয় ক্ষমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ । সমস্ত জার্মানির শিক্ষিত মানুষেরা লুথারের তত্ত্বে র দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল । এই ৯৫টি ছিল তাত্ত্বিক প্রশ্ন , এতে বাইবেল ও খ্রিস্টান দর্শন সম্বন্ধে তাত্ত্বিক গুরুগম্ভীর পাণ্ডিত্যপূর্ণ প্রশ্ন ছিল । উইলিয়াম ওকামের চিন্তাভাবনা দ্বারা মার্টিন লুথার প্রভাবিত হয়েছিলেন । ইউরোপের এই চিন্তা ধারা পরিণত ছিল nominalism নামে । নমিনালিস্ট চিন্তাধারায় উল্লেখযোগ্য ছিল বিশ্বাস ও নিবেদিতপ্রাণতা । নমিনালিস্টরা মনে করত বিশ্বাসই মুক্তি আনবে , তবে এই বিশ্বাস অর্জনের জন্য শাস্ত্র পড়তে হবে এবং গভীর আগ্রহের সঙ্গে বিভিন্ন মানুষের বোধগম্য ভাষায় বাইবেল অনুবাদ করতে হবে । লুথার এইমতে বিশ্বাসী ছিলেন । তিনি বিশ্বাস করতেন খ্রিস্টধর্ম প্রচারিত হওয়া উচিত এবং আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল রচনা করা একান্ত দরকার । তিনি খ্...