হরপ্পীয় সভ্যতার অন্তর্গত বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের ফলে যে বৈশিষ্ট্যটি প্রথমেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা হল
বড় মাপের শহরের নিয়মিত ও ধারাবাহিক উপস্থিতি। এই সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত প্রধান চারটি নগর
মহেঞ্জোদারো, হরপ্পা, লোথাল
ও কালিবঙ্গান ছাড়াও ধোলাবিরা, বানওয়ালী, রোপার, সুরকোটডা, কুনতাসি
প্রভৃতি স্থানে অপেক্ষাকৃত ছোট নগরের অস্তিত্বও দেখা
যায়। খ্রিস্টপূর্ব
তৃতীয় সহস্রাব্দে এই নগর সভ্যতার ভিত্তি আলোচনার পূর্বে নগরগুলির পরিকাঠামোগত
পরিকল্পনাকে সংক্ষেপে আলোচনা করা প্রয়োজন।
হরপ্পার
নগর পরিকল্পনায় একটি নির্দিষ্ট ছক দেখা যায়। মহেঞ্জোদারো,
হরপ্পা, কালিবঙ্গান, ধোলাবিরা,
সুরকোটডা, কুনতাসি প্রভৃতি নগরগুলি দুটি অংশে
বিভক্ত ছিল – ১) উঁচু
এলাকা বা সিটাডেল বা দুর্গ এলাকা যেখানে প্রধান ইমারতগুলি থাকত এবং ২) নিম্ন
এলাকা যেখানে সাধারন জনমানসের বসতি ছিল। শহরের উচু অংশের চারপাশে থাকত
সুদৃঢ় প্রাকার; হরপ্পাতে
প্রাকারের কোথাও কোথাও প্রহরীদের নজর রাখার জায়গা দেখা যায়। কালিবঙ্গানের প্রাকার ছিল
বিশালাকার। প্রাকার ছাড়াও পরিখাও সিটাডেলের
চারপাশে ব্যবহার করা হত। মহেঞ্জোদারো
নগর প্রাকার বহুবার সংস্কার করা হয়েছিল কারণ পুরাতাত্ত্বিকদের অনুমান সিন্ধু নদের
বন্যায় মহেঞ্জোদারোর প্রাকার একাধিকবার বিনষ্ট হয়েছিল।
হরপ্পা সভ্যতার অন্তর্গত প্রায় সব নগরের প্রাকারের গায়ে তোরণের উপস্থিতি লক্ষণীয়। সুরকোটডা
এবং ধোলাবিরাতে তোরণগুলি যথেষ্ট জমকালো ছিল, বাকি
সর্বত্র তোরণগুলির গঠন ছিল সাধারণ। পুরাতাত্ত্বিকদের
অনুমান যে কোন শক্তিশালী বহিঃশত্রুর হাত থেকে বাঁচার জন্য নয়, সাধারণ চোর-ডাকাত বিশেষত পশুহরণকারীদের
হাত থেকে বাঁচার জন্যই হরপ্পার নগরবাসীরা তাদের নগরগুলিকে প্রাকার দ্বারা সুরক্ষিত
করতেন। মহেঞ্জোদারোর মত নগরে এই প্রাকার বন্যার
হাত থেকে বাঁচার জন্য নির্মিত হয়ে থাকতে পারে।
হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো,
কালিবঙ্গান এবং সূরকোটডায় উঁচু সিটাডেল বা দুর্গ এলাকার আকার নিম্ন নগর অপেক্ষা অনেকটাই ছোট এবং প্রত্যেক ক্ষেত্রেই
উঁচু দুর্গ এলাকাটি নিম্ন নগরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। হরপ্পা,
মহেঞ্জোদারো, কালিবঙ্গান, লোথাল প্রভৃতি নগরেই
সিটাডেলটি আয়তাকার এবং এই এলাকাতেই প্রধান ইমারতগুলির
ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে। লোথালের বৈশিষ্ট্য এর জাহাজঘাটা যেটি লম্বায় ছিল ২১৬ মিটার এবং
চওড়ায় ৩৭ মিটার। সুরকোটডায়
শহরের উচু ও নিম্ন এলাকার মধ্যে কোন বেষ্টনী নেই যদিও তাদের পারস্পরিক অবস্থান
হরপ্পার মতই। কালিবঙ্গানে আবার সিটাডেল এবং নিম্ন নগর দুটিই প্রাকার বেষ্টিত এবং দুটিতে প্রবেশের তোরণও পৃথক। হরপ্পীয় কেন্দ্রগুলির
মধ্যে কেবলমাত্র ধোলাবিরাতেই তৃতীয় একটি মধ্যমনগরের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। (কালিবঙ্গানেও একটি
মধ্যম নগরের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়)
জলনিকাশি ব্যবস্থা হরপ্পা সভ্যতার নগর
জীবনের এক অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য যা খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের অন্য কোন
সভ্যতায় লক্ষ্য করা যায় না। মূল
রাস্তাগুলির নীচে এক থেকে দুই ফুট গভীর ঢাকনা
দেওয়া বড়নালা ছিল, তার
সঙ্গে যুক্ত ছিল অনেক ক্ষুদ্রতর নালা যা দিয়ে প্রতিটি বাড়ির জল নিষ্কাশিত হত। সোকপিটের অস্তিত্ব, স্নানাগারের ব্যাপক ব্যবহার নাগরিক পরিছন্নতাবোধ বা স্বাস্থ্যসচেতনতার
ইঙ্গিত বহন করে। সমগ্র
জলনিকাশি ব্যবস্থাকে নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে পরিষ্কার করা হত। জলনিকাশের উন্নত ব্যবস্থা
মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পার মত কালিবঙ্গান বা লোথালেও উপস্থিত, যদিও সমসাময়িক
সুমেরীয় ও অন্যান্য সভ্যতায় তা লক্ষ্যণীয় নয়। সুমেরীয়
নগরগুলোতে বাড়ির আঙ্গিনার তলার ভূগর্ভে প্রথিত নালীতে নোংরা জল জমা হত, কিন্তু
ঐ জল শহরের বাইরে নিষ্কাশন করার কোন
ব্যবস্থা ছিলনা। সেই দিক
দিয়ে হরপ্পা সভ্যতার জল নিকাশি ব্যবস্থা নিঃসন্দেহে অনেক উন্নততর।
প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে হরপ্পার
নগরগুলিতে তিন ধরনের বাড়ীর ধ্বংসাবশেষ
পাওয়া গেছে - ১) বসত বাড়ী, ২) বৃহৎ
অট্টালিকা এবং ৩) রাষ্ট্রীয় স্নানাগার। নগরগুলিতে বিভিন্ন আকারের বসতগৃহ
ছিল যাদের মধ্যে ছোটগুলিতে কেবল মাত্র দুটি ঘর ছিল। তবে সাধারণ
নাগরিকদের বাড়ীতে বেশ কিছু কামরা, রান্নাঘর,
স্নানাগার ও আঙ্গিনা থাকত। ব্যাবিলনীয় নগরের বাসগৃহের মত সিন্ধু
নগরের গৃহগুলিতে উন্মুক্ত আঙ্গিনা থাকত। কোনও কোনও বাড়ীতে
সিঁড়ির চিহ্ন থেকে যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নেওয়া চলে যে ঐ বাড়ীগুলিতে একাধিক তলা ছিল। লোথালে একটি রাস্তার
ধারে দুই বা তিন কামরা বিশিষ্ট পরপর যে বারোটি বাড়ীর
ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলিকে দোকান বলে মনে করা হয়। ২৬ X ১২.৫ X ৫.৫ সেমি আয়তন বিশিষ্ট পোড়ামাটির মসৃণ
ইটের সাহায্যে বাড়ীগুলি নির্মিত হত
যেগুলিতে দেওয়ালের কোনে দরজা (সম্ভবত কাঠের
তৈরি) থাকত। সাধারণ গৃহের বাইরের দেওয়ালে জানলার কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে শহরের
নিম্ন এলাকাতেই সাধারণ নাগরিকদের বসত বাড়ীগুলি অবস্থিত ছিল।
শহরের দুর্গ বা সিটাডেল এলাকাতেই প্রধান
ইমারতগুলি তৈরী করা হয়েছিল যেগুলির অধিকাংশই নগরের সামূহিক জীবনযাত্রার প্রয়োজনে ব্যবহৃত হত। এই প্রসঙ্গে হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোতে
পাওয়া দুটি বৃহৎ শস্যাগারের উল্লেখ করা
চলে। হরপ্পার শস্যাগারটির আয়তন ৯০০০ বর্গফুট; দুটি
শাড়িতে শস্যাগারটি বিভক্ত, প্রতি সারিতে ছয়টি করে শস্য সংরক্ষণ করার মঞ্চ; দুই সারি মঞ্চের মাঝখানে ২৩ ফুট লম্বা চলাচলের মূল পথ। শস্যাগারের মধ্যে
হাওয়া চলাচলের জন্য বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা ছিল এবং এর দ্বারা শস্য শুকনো রাখা যেত। শস্যাগারটির ঠিক দক্ষিণে গোলাকৃতি গর্ত
বিশিষ্ট একটি মঞ্চকে পুরাতাত্ত্বিক ফসল ঝাড়াই এর ক্ষেত্র বলে মনে করেন। এই মঞ্চের সঙ্গে লাগোয়া এক কামরা
বিশিষ্ট প্রকোষ্টগুলিকে শ্রমিকদের বাসস্থান বলে
অনুমান করা হয়। চারশ মাইল
ব্যবধানে অবস্থিত মহেঞ্জোদারোর আবিষ্কৃত শস্যাগারের
অনুরূপ আয়তন অর্থনৈতিক জীবনে নিয়ন্ত্রণের ছাপ বহন করে। শস্যাগারে আনীত
শস্য সম্ভবত রাজস্ব হিসাবে গ্রহণ করা হত, স্টুয়ার্ট পিগট ও মার্টিমার হুইলারের
মতে শস্যাগারটি আধুনিক ব্যাঙ্কের মত শস্য লেনদেন করত।
মহেঞ্জোদারোতে
বৌদ্ধস্তূপের কাছে একটি বিশাল ইমারত পাওয়া গেছে
যা সম্ভবত পুরোহিত সম্প্রদায়ের জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এই ইমারতের মধ্যে খিলানযুক্ত ও বসবাসের আসন যুক্ত ৮০x৮০ ফুট আয়তন
বিশিষ্ট একটি বিশাল কামরা পাওয়া গেছে যেটিকে একটি সভাগৃহ বলে অনুমান করা হয়। মহেঞ্জোদারোতে প্রাপ্ত আড়াইশ ফুট দীর্ঘ
বৃহৎ ইমারতটিকে কোনও কোনও প্রত্নতাত্ত্বিক রাজা
বা অনুরূপ কোন শাসকের প্রাসাদ বলে মনে করেন। যদিও নিশ্চিতভাবে হরপ্পা সভ্যতায়
শাসকগোষ্ঠীর কোন পরিচয় পাওয়া যায় না। মহেঞ্জোদারোতে
প্রাপ্ত বৃহৎ অট্টালিকাগুলির কোনোটিকে খান্স
(khans) আবার কোনোটিকে Collegiate Building বলে মনে
করা হয়। বৌদ্ধ স্তূপের পশ্চিমে মার্শাল যে বৃহৎ স্নানাগারটির আবিষ্কার করেছেন সেটি দৈর্ঘ্য ৩৯ ফুট,
প্রস্থে ২৩ ফুট ও গভীরতায় ৮ 8 ফুট। জলাশয়টির
চারপাশে ছিল কয়েক সারি ঘর।
জলাশয়টিতে স্নানের জন্য জল আসত নিকটস্থ একটি কূপ থেকে এবং জল নিষ্কাশনের জন্য আলাদা একটি বড় প্রণালী ছিল।
হরপ্পার নগরগুলির ধ্বংসাবশেষ থেকে একটি
সুনির্দিষ্ট বিন্যাস লক্ষ্য করা যায়। নগরের উচ্চ দুর্গ এলাকায় যেমন ছিল ধনীদের বৃহত্তম প্রাসাদপম অট্টালিকা;
রাষ্ট্রীয় শস্যাগার, সভাগৃহ ইত্যাদি ইমারতগুলি অন্যদিকে তেমনি
নিম্ন এলাকায় ছিল দোকানি ও কারিগরদের ছোট ছোট বসতবাড়ীগুলি। ক্রিটের
মতই এই নগরগুলিতে গণতান্ত্রিক বুর্জোয়া অর্থনীতির ধারণা প্রচলিত ছিল। প্রকৃতপক্ষে সামাজিক পরিকাঠামোকে
নগর পরিকাঠামোর মধ্যে প্রতিফলন ঘটানোর প্রয়াস হরপ্পা সভ্যতায় লক্ষণীয়। এই পরিকাঠামো গঠনে
সচেতনতা ও স্বাতন্ত্র্যকে লক্ষ্য করে হুইলার একে
'meticulous planning' (যে পরিকল্পনায় খুঁটিনাটি বিষয়েও সতর্ক নজর রাখা হত) বলে
অভিহিত করেছেন যেখানে শৃংখলাবদ্ধভাবে বিভিন্ন নথিপত্র রক্ষিত হত। মিশরীয় সভ্যতার পিরামিড বা
সুমেরীয় সভ্যতার মহার্ঘ ঐশ্বর্যময় মন্দিরগুলি হরপ্পার নগরগুলিতে অনুপস্থিত। বস্তুতপক্ষে হরপ্পার নগরগুলির নির্মাণ কৌশলে সৌন্দর্যের চেয়ে দৃঢ়তা ও উপযোগীতাকে বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। হরপ্পা সভ্যতা থেকে যে নগর জীবনের চিত্র
লক্ষ্য করা যায় পিগট তাঁকে Monotonous
বা
একঘেয়ে বলে উল্লেখ করেছেন। বস্তুতপক্ষে কি
পরিকল্পনায়, কি পরিকাঠামোয় হরপ্পীয় নগরগুলি ছিল
যেন একটি অদৃশ্য কিন্তু দৃঢ় অভিন্ন সূত্রে গাঁথা।
খ্রিস্টপূর্ব
তৃতীয় সহস্রাব্দে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই ব্যাপক নগরায়নের
ভিত্তি কি ছিল তা নিয়ে পুরাতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। রামশরণ শর্মা মনে করেন যে, এই নগর সভ্যতার ভিত্তি ছিল দুটি ১) ব্রোঞ্জ প্রযুক্তি (ব্রোঞ্জ
ও তাম্র নির্মিত অস্ত্রের সাজ-সরঞ্জামের ব্যাপক প্রচলন
ছিল) এবং ২) কৃষক কর্ত্তৃক উৎপন্ন উদ্বৃত্ত। নদীমাতৃক এলাকায় এই সভ্যতার উদ্ভব, বিকাশ ও প্রসার ঘটায় প্রথমাবধিই হরপ্পা সভ্যতার কৃষি অর্থনীতি সুদৃঢ় ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যথেষ্ট পরিমাণ ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা থাকলেই তবে নগরের বাসিন্দাদের কাছে গ্রাম থেকে উদ্বৃত্ত খাদ্য সংস্থান শহরে সরবরাহ করা যেত। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পায় আবিষ্কৃত
শস্যাগার প্রমাণ করে যে কৃষি অর্থনীতির সাফল্যই হরপ্পা সভ্যতার পেশাদারী ও সর্বসময়ের জন্য নিযুক্ত কারিগর ও বণিকদের ক্রিয়া-কলাপ
অব্যাহত রেখেছিল। রামশরণ
শর্মা আরও মনে করেন যে, হরপ্পার নগরায়নের বিকাশে পরিবেশগত আনুকূল্যও কাজ করেছিল। সিন্ধু ও তার উপনদীগুলি এবং
স্বরস্বতীর অপেক্ষাকৃত বর্ষণমুক্ত ও বন্যাপ্রবণ সমভূমিতে তাম্র প্রস্তর যুগের
প্রযুক্তি যথেষ্ট কার্যকর হয়েছিল কেননা যেসব অঞ্চলে হরপ্পার নগর বসতি প্রধানত
গড়ে ওঠে সেখানে পলিমাটির আস্তরণ পরিষ্কার করার
কোনও সমস্যা ছিল না। দিলীপ কুমার চক্রবর্তী মনে করেন যে, গ্রামীণ 'আদি' পর্যায় থেকে 'পরিণত' পর্যায়ের লিপিযুক্ত নাগরিক জীবনের উত্তরণের পেছনে একটি
বড় কারণ ছিল ঘর্ঘরা, (হাকরা বা
সরস্বতী) রাভি, সিন্ধু
প্রভৃতি নদীতে খাল কেটে সেচ ব্যবস্থার সৃষ্টি। শর্মার মত চক্রবর্তীও হরপ্পার নগর সভ্যতার বিকাশে কারিগরী
শিল্পের ব্যাপকতাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। অন্যদিকে শিরিন রত্নাগর মনে করেন যে, ব্যাপক
বৈদেশিক বাণিজ্যই হরপ্পা সভ্যতার
নগরগুলি গড়ে ওঠার পেছনে দায়ী। স্যাফার, পোখেল এবং চক্রবর্তী যদিও রত্নাগরের এই মত খন্ডন করেছেন। উপরোক্ত আলোচনার উপর ভিত্তি করে হরপ্পার
নগর সভ্যতার উদ্ভব ও বিকাশের একটি ধারা অনুমান করা যেতে পারে – (ক) সিন্ধু সরস্বতী নদী উপত্যকার অনুকূল
পরিবেশে কৃষিব্যবস্থা শক্তিশালী ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেচব্যবস্থা যাকে আরো শক্তিশালী করে তোলে, (খ) এর ফলে কৃষি উৎপাদনে উদ্বৃত্ত হতে থাকে এবং বিকল্প পেশা হিসাবে শিল্প ও
বাণিজ্যের উদ্ভব ঘটে, (গ) উদ্বৃত্ত কৃষি উৎপাদনের উপর জীবন ধারণ করে নগরবাসী কারিগর ও বণিক
শ্রেণী যথাক্রমে কারিগরী শিল্পের এবং
বৈদেশিক তথা আভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার
ঘটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হরপ্পার
কেন্দ্রগুলিতে নগরজীবনের সাফল্যকে ধরে রেখেছিল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন