তুংচি পুনরুদ্ধারের সীমাবদ্ধতা সত্বেও
চীনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টায় তারা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। রক্ষণশীল তুং চি সরকার উপলব্ধি
করেছিল যে আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ এবং বৈদেশিক আক্রমণ
থেকে চীনের রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে সামরিক
ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যার
সাহায্যে চীনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে
আত্মশক্তি আন্দোলনের সূচনা হয়। তুংচি পুনরুদ্ধারের
সময় থেকে উনিশ শতকের শেষ দিক পর্যন্ত
আত্মশক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সংস্কার প্রবর্তন,
আত্মশক্তি আন্দোলন নামে খ্যাত। এই
আত্মশক্তি আন্দোলনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল সীমিত আধুনিকীকরণ।
আফিম যুদ্ধে বিদেশীদের কাছে পরাস্ত
হওয়ায় রাজকুমার kung বিদেশীদের
শক্তি ও অনুপ্রবেশের গুরুত্ব উপলব্ধি করে নতুন কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তৎপর
হন। তাই পাশ্চাত্য দেশগুলোর সঙ্গে
কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের
জানুয়ারি মাসে Tsungli Yamen নামক বৈদেশিক দপ্তরের সৃষ্টি করা
হয়। তত্ত্বগতভাবে Tsungli
Yanen বৈদেশিক নীতি গ্রহণ করতে পারত না, গৃহীত
নীতি কার্যকর করতে পারত। Tsungli
Yamen পাঁচটি বৈদেশিক শক্তির দপ্তর নিয়ে সংগঠিত
হয়েছিল। Tsungli Yamen এর সঙ্গে অপর দুটি
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ছিল,যথা- শুল্ক দপ্তর এবং বৈদেশিক ভাষা শিক্ষার দপ্তর। ঐতিহাসিক হাস (Hus) বলেছেন “চীনে পাশ্চাত্য শিক্ষার সূচনা ও সম্প্রসারণে
Tung wen Kuan গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল”।
আত্মশক্তি আন্দোলনের প্রথম পর্বে চীনে
আধুনিকীকরণের ব্যাপারে Tsungli Yaman গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা নিয়েছিল। এই
পর্বে আধুনিক অস্ত্র নির্মাণের জন্য চারটি নতুন কারখানা স্থাপন করা হয়। আত্মশক্তি আন্দোলনের প্রথম
পর্যায়ে প্রযুক্তিবিদ্যা ও কূটনীতিতে চীনাদের
পারদর্শী করার উদ্দেশ্যে চীনে বেশকিছু বিদ্যালয় ও অনুবাদ কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। এই সময় পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণের
প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অস্ত্র নির্মাণ ও জাহাজ নির্মাণ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। কেননা প্রথমদিকে আত্মশক্তির মূল
লক্ষ্য ছিল সামরিক শিল্পের আধুনিকীকরণ। কিন্তু
এটা লক্ষণীয় যে এই ব্যাপারে যেসব বিদেশীদের
সাহায্য নেওয়া হয়েছিল তাঁরা এই শিল্পের
সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। দ্বিতীয়তঃ
সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন সামরিক শিল্পগুলোতে প্রাদেশিক নেতাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটেছিল। অর্থাৎ এই সামরিক শিল্পগুলোতে
আঞ্চলিকতা ও সামন্ততান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকট হয়ে ওঠে।
আত্মশক্তি আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় (১৮৭২-৮৫) জাহাজ নির্মাণ, রেলপথ, খনি, টেলিগ্রাফ
ব্যবস্থা ইত্যাদি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এই সময় যৌথ উদ্যোগে অর্থাৎ
সরকারি তত্ত্বাবধান এবং বণিকদের ব্যক্তিগত মালিকানার ভিত্তিতে বেশকিছু কারখানা
গড়ে উঠেছিল। বণিকদের
ব্যক্তি পুঁজি এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা কারখানার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল China
merchants steam, Navigation company, Shanghai cotton cloth mills, Imperial Telegraph,
Administration ইত্যাদি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ এই দ্বিতীয় পর্যায়ে চীনকে
অর্থ ও সামরিক শক্তির দিক থেকে শক্তিশালী করতে চেয়ে ছিলেন।
আত্মশক্তি আন্দোলনের তৃতীয় পর্যায় (১৮৮৫-৯৫ সামরিক নৌশিল্পের সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার সাথে
সাথে অন্য মাঝারি শিল্প গড়ে তুলে দেশকে সম্পদশালী করার প্রয়াস নেওয়া হয়েছিল। এই সময় সরকারি ও বেসরকারি বণিকদের যৌথ উদ্যোগগুলোর
মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিল kweichow Iron works এবং
Hupeh Textile company। এই
কারখানায় সরকার বেসরকারি পুঁজিকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু শিল্পে
বেসরকারি নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা মেনে নেয়নি। সুতিবস্ত্র
শিল্প এবং তুলোবোনা শিল্প এই পথে গুরুত্ব লাভ করেছিল। এই তৃতীয় পর্যায়ে আত্মশক্তি বৃদ্ধির
জন্য গৃহীত পরিকল্পনার কয়েকটি হল পিকিং এ Board of Admirality
উদ্বোধন,
Tientsin এ একটি সামরিক শিক্ষা কেন্দ্রের প্রবর্তন, ক্যান্টনে
টাকশাল স্থাপন, কয়লা খনি, কাগজ, লৌহ
কারখানা স্থাপন ইত্যাদি।
আত্মশক্তি আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা
১৮৬১-৯৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চীনের
আত্মশক্তি বৃদ্ধির জন্য গৃহীত ব্যবস্থার মধ্যে কিছু সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়। আত্মশক্তি আন্দোলনের প্রধান
উদ্দেশ্য ছিল চীনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, বিদেশী
অনুপ্রবেশ এবং অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ মোকাবিলা করা। তাই শিল্পোদ্যোগ প্রধানত আগ্নেয়াস্ত্র
নির্মাণ, জাহাজ ও যন্ত্রপাতি নির্মাণ, কারখানা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু চীনে ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৯৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত যে সমস্ত
রণতরী, বন্দুক, কামান নির্মাণ করা হয়েছিল তা পাশ্চাত্যের তুলনায়
নিকৃষ্ট মানের ছিল। ঐতিহাসিক Jean Chesneaux
বলেছেন
“বিদেশীদের
থেকে চীনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পরিবর্তে চীন সামরিক শিল্পে বিদেশীদের উপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল”। যেমন
চীনা কর্তৃপক্ষ যুদ্ধ জাহাজগুলো বিদেশ
থেকে আনিয়েছিলেন। চীনের
যন্ত্রবিদ্যায় অনগ্রসরতার জন্যই মাঞ্চু সরকার বিদেশ
থেকে যুদ্ধের সরঞ্জাম আমদানি করতে বাধ্য হয়েছিল।
আধুনিক ভাবে সামরিক বা প্রতিরক্ষা
ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা কনফুসীয় নীতি ভিত্তিক থেকে গিয়েছিল। সামরিক শিল্পগুলোর মধ্যে জাতীয়
স্তরে কোন সমন্বয় ছিল না। বিভিন্ন
আঞ্চলিক নেতা নিজ নিজ উদ্যোগে শিল্পগুলো গড়ে তুলেছিলেন বলে আঞ্চলিক ও
সামন্ততান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকট হয়ে উঠেছিল। এর ফলে জাতীয় স্বার্থের পরিবর্তে
আঞ্চলিক স্বার্থ প্রাধান্য পেয়েছিল। এর
পরিণাম স্বরূপ রক্ষণশীল সমাজের আত্মশক্তি বৃদ্ধির আন্দোলন সাময়িক ভাবে সাফল্য পেলেও সম্পূর্ণ ভাবে সফল হতে
পারেনি। ১৮৮৪-৮৫
খ্রিস্টাব্দে চীন ফরাসি যুদ্ধের চীনের শোচনীয় পরাজয় এবং ১৮৯৪-৯৫ খ্রিস্টাব্দে
চীন জাপান যুদ্ধে চীনের বিপর্যয় বিশেষত সামরিক ব্যবস্থার ব্যর্থতা প্রমাণ করে। আত্মশক্তি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত
নেতৃত্বের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়
আন্দোলনের সীমিত উদ্দেশ্যের মধ্যে। যথা
চীনকে বিদেশী আক্রমণ থেকে রক্ষা করা এবং
অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করা। কিন্তু
চীনকে আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলায় কোন বৃহত্তর পরিকল্পনা গৃহীত হয়নি। যেমন-
অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে চীনের আধুনিকীকরণের কোন প্রচেষ্টা
করা হয়নি।
আত্মশক্তি আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা একটি
অন্যতম কারণ ছিল স্ব-বিরোধীতা। একদিকে
আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ কনফুসীয় মতাদর্শ অনুযায়ী সামন্ততান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে
শাসন পরিচালনা করতেন। অন্যদিকে
আধুনিক শিল্প ও প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাতে চেয়েছিলেন। অর্থাৎ রক্ষণশীলতা এবং আধুনিকতা এই দুই
ধারায় তাঁরা চলতে চেয়ে ছিলেন। কিন্তু এই স্ব-বিরোধিতা আত্মশক্তি আন্দোলনের দুর্বলতাকেই সুস্পষ্ট করেছিল। এর পরিণাম স্বরূপ স্বাধীন
বুর্জোয়া শ্রেণীর পরিবর্তে সাম্রাজ্যবাদ ও সামন্ততন্ত্রের উপর নির্ভরশীল একটি বুর্জোয়া শ্রেণি গড়ে উঠেছিল।
আত্মশক্তি আন্দোলনের ব্যর্থতার একটি
গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল পুঁজির অভাব। পুঁজির
অভাব শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। বেসরকারি পুঁজির পরিমাণ ছিল সীমিত এবং সরকারি পুঁজি বিনিয়োগ করা
হয়েছিল। কিন্তু
সরকার কৃষি ক্ষেত্রে ও বাণিজ্যক্ষেত্রে কর বৃদ্ধি করে পুঁজি সংগ্রহ করতে তৎপর হলেও
শিল্পের বিনিয়োগের হার বৃদ্ধি পায়নি। আন্দোলনের
নেতৃবৃন্দ এই সত্য উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন যে কৃষি ও বাণিজ্যকে উপেক্ষা করে
শিল্পায়ন সম্ভব নয়। শাসকশ্রেণীর
দুর্নীতি ও পুঁজির অভাবকে তীব্রতর করেছিল। আত্মশক্তি আন্দোলনের প্রধান ব্যক্তি
বিধবা সম্রাজ্ঞী Tzu-His এবং Li-Hung Chang ছিলেন
দুর্নীতিগ্রস্ত। আত্মশক্তি
আন্দোলনকে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার অভাব
আন্দোলনকে দুর্বল করেছিল। এই
আন্দোলনের অন্যতম নেতা Li hung Chang এর নেতৃত্বে
নির্মিত অস্ত্রাগার গুলোর উপর তিনি নিজেও কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ সুদৃঢ় করতে
প্রয়াসী হয়েছিলেন। আঞ্চলিক রাজকর্মচারী দাও একই নীতি গ্রহণ করায় জাতীয় স্তরে
কোন সমন্বয় সম্ভব হয়নি। অর্থাৎ
আত্মশক্তি আন্দোলন জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করার পরিবর্তে আঞ্চলিক নেতাদের স্বার্থ
রক্ষা করেছিল।
উপনিবেশিকতা
বাদ ও সাম্রাজ্যবাদ অনুপ্রবেশ ও চীনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিদেশিদের উপস্থিতি
আত্মশক্তি বৃদ্ধির পথে প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল তাই নয়, পরিস্থিতিকে
আরো জটিল করেছিল। সামরিক
ব্যয় বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণ দানের ফলে আর্থিক সংকট দেখা দেয়। শিল্পায়ন ও আধুনিকীকরণের
প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
আত্মশক্তি
আন্দোলনের ফলাফল
আত্মশক্তি আন্দোলনের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা
সত্ত্বেও এই আন্দোলনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক, আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ফলাফল উল্লেখ করা যায়। প্রথমত তুং চি পুনরুদ্ধার এবং আত্মশক্তি
আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জেন্ট্রি শ্রেণীর ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটেছিল। দ্বিতীয়তঃ এই আন্দোলনের ফলে চীনে
বেশ কিছু শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছিল। এইসব
কারখানায় গ্রাম থেকে কৃষকরা এসে শ্রমিক হিসাবে যোগ দেওয়ায় শহরের জনসংখ্যা
বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং একটি আধুনিক শ্রমিক শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছিল।
আত্মশক্তি
আন্দোলনে শিল্পায়নকে গুরুত্ব দেওয়ার ফলে চীনের
শহরে এক নতুন পেশাদারী শ্রেণী বা Entrepreneur শ্রেণীর
উদ্ভব হয়েছিল। ইঞ্জিনিয়ার, ম্যানেজার প্রমূখ নিয়ে গড়ে ওঠা এই শ্রেণী বিদেশ থেকে
প্রযুক্তিবিদ্যায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। শিল্পায়নের
আরোও একটি প্রত্যক্ষ পরিণাম ছিল নগরায়ন
যেহেতু আগ্নেয়াস্ত্র, যন্ত্রপাতি, সুতিবস্ত্র, জাহাজ
নির্মাণ ইত্যাদি কারখানাগুলো সমুদ্র ও নদীর তীরবর্তী শহরে গড়ে উঠেছিল। তাই এই শিল্পায়নকে
কেন্দ্র করে কৃষি প্রধান দেশ চীনে নগরায়নের
প্রক্রিয়াটিও ত্বরান্বিত হয়েছিল। সাংহাই, নানকিং, ফোচাও, টিয়েনসিং, হংকং, ইত্যাদি আধুনিক
শহরগুলি গড়ে উঠেছিল।
সাংস্কৃতিক দিক থেকে এই আন্দোলনের
গুরুত্ব হল এই যে, আধুনিক
পাশ্চাত্য শিক্ষার সূচনা চীনে এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই হয়েছিল। অর্থাৎ এই সময় চীনে বুদ্ধিজীবীরা পাশ্চাত্য জ্ঞানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে
পাশ্চাত্যের বিভিন্ন বিষয়ক গ্রন্থ অনুবাদ ও প্রকাশকে প্রাধান্য দিয়েছে। এর ফলে
চীনের বৌদ্ধিক জগতের দিগন্ত সম্প্রসারিত হয়েছিল। তবে এর প্রভাব শুধুমাত্র সমৃদ্ধ শ্রেণীর মধ্যে
সীমাবদ্ধ ছিল।
এটা ঠিক যে আত্মশক্তি আন্দোলনের ফলে
চীনের আধুনিক প্রযুক্তি বিদ্যার প্রবর্তন হয়েছিল। কিন্তু সামরিক ক্ষেত্রে আধুনিকতার
অগ্রগতি সম্ভব হয়নি। ১৮৯৪-৯৫
খ্রিস্টাব্দে জাপানের কাছে চীনের শোচনীয় পরাজয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা
প্রকাশিত হয়। তাই নয় আত্মশক্তি
আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা ও উদ্ঘাটিত হয়েছিল। ঠিক এইভাবে যদিও শিল্পায়নের ফলে
চীনে একটি আধুনিক পেশাজীবী শ্রেণীর উদ্ভব হয়েছিল কিন্তু সামন্ততান্ত্রিক ও
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির যৌথ প্রভাবে এই নবসৃষ্ট শ্রেণি একটি স্বাধীনচেতা মধ্যবিত্ত শ্রেণীরূপে
আত্মপ্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। অর্থাৎ
আত্মশক্তি আন্দোলন চীনে কোন কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটিয়ে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে
ব্যর্থ হয়েছিল। সাময়িক কিছু শিল্প ও সাংস্কৃতিক
ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিয়ে স্থিতাবস্থাকে সুদৃঢ় করেছিল।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন