প্রাচীন ভারতে তথা ভারতের সামগ্রিক ইতিহাসের মৌর্য সাম্রাজ্যের
প্রতিষ্ঠার বিষয়টি সর্বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত কঠোর পরিশ্রমের
মাধ্যমে সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, অশোকের অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও প্রতিভার দরুন এই
সাম্রাজ্য প্রায় সর্বভারতীয় চরিত্রের রূপ লাভ করেছিল। ভারতের বাইরে
বহুদূর দিগন্ত পর্যন্ত এই সাম্রাজ্যের খ্যাতি সমকালীন যুগে পরিব্যাপ্ত হয়েছিল। কিন্তু আনুমানিক ২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অশোকের মৃত্যুর
পর সাম্রাজ্যে ক্রমিক অবক্ষয়ের শুরু হয় এবং ১৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সম্পূর্ণ বিনাশ
ঘটে। এই বিশাল সাম্রাজ্যের পতনের জন্য একাধিক কারণ ছিল বলে
ঐতিহাসিকরা মনে করতেন।
অশোকের মৃত্যুর অর্ধশতাব্দীর মধ্যে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন
ঘটেছিল সেহেতু এ বিষয়ে অশোকের দায়িত্ব কতখানি ছিল তা নিয়ে পন্ডিত হরপ্রসাদ
শাস্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি অশোককে দায়ীকরে বলেন তাঁর নীতিগুলোর ফলে রাজশক্তির প্রতি
ব্রাহ্মণদের তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছিল, যার ফলে ব্রাহ্মণ্য বিপ্লব সৃষ্টি হয়। পন্ডিত শাস্ত্রী মনে করেন যে, অশোকের নীতি ছিল বৌদ্ধদের অনুসারী ও ব্রাহ্মণদের
বিরোধী। অশোক যুদ্ধনীতি ত্যাগ করে ধর্মবিজয়ের নীতি গ্রহণ করে
কাজটিকে সফলতা দানের জন্য তিনি কিছু সুনির্দিষ্ট নীতি নেন। তাঁর পঞ্চম মুখ্য স্তম্ভশাসন ও
অপরাপর লেখা থেকে জানা যায় যে তিনি পশুবলির বিরোধিতা করেছিলেন। অশোকের মতো একজন শূদ্র শাসক পশুবলির ন্যায় অতিপ্রচলিত রীতি
বিরোধী বিধান জারি ব্রাহ্মণদের
অসন্তোষ প্রকট করে। দ্বিতীয় যুক্তি হিসেবে বলা যায় যে, অশোক ব্রাহ্মণদের মিথ্যা বা ভন্ড দেবতা বলে
প্রতিপন্ন করেছিল। তৃতীয় যুক্তি হিসেবে বলা যায়, অশোক ধর্মমহাপাত্র নামে নতুন
কর্মচারী নিয়োগ করেছিল। এই কর্মচারীরা প্রত্যক্ষভাবে ব্রাহ্মণদের অধিকারের ওপর
হস্তক্ষেপ করেছিল। দীর্ঘদিন ধরে তারা যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেয়ে
আসছিলেন ধর্মমহাপাত্ররা এদের কর্তৃত্ব হেতু তা ব্যাহত হয়, সাম্রাজ্যের
স্থিতিশীলতার প্রতি ব্রাহ্মণরা আস্থা হারিয়ে ফেলে। চতুর্থ যুক্তি অশোক ‘দন্ড সমতা’ ও ‘ব্যবহার সমতা’ নীতি চালু করে
ব্রাহ্মণদের বিচার ও আইনের ক্ষেত্রে যে
বিশেষ অধিকার ভোগ করতো তা বিলোপ করে। পঞ্চম চুক্তি
পুষ্যমিত্র শুঙ্গের বিদ্রোহের পশ্চাতে ব্রাহ্মণদের ষড়যন্ত্র ছিল যার ফলে শেষ মৌর্য সম্রাট
বৃহদ্রথ নিহত হয়।
মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনে ডঃ হেমচন্দ্র
রায়চৌধুরী পন্ডিত শাস্ত্রী মহাশয় যুক্তিকে খন্ডন করে বলেন যে, পশুবলি অশোকের বহু
আগেই স্মৃতিশাস্ত্র ও উপনিষদে নিষিদ্ধ হয়েছিল। এছাড়া অশোক শূদ্র বংশীয় ছিলেন না। তিনি
ক্ষত্রিয় বংশ ছিলেন এমন প্রমাণ বৌদ্ধ, জৈন সাহিত্যে পাওয়া যায়। মুদ্রারাক্ষস নাটকের মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্তকে
শূদ্র বলা হয়েছে, এই মুদ্রারাক্ষস অনেক পরের যুগের রচনা। অশোক ব্রাহ্মণদের মিথ্যা বা ভন্ড দেবতা বলে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয় তা ঠিক নয়। কারণ পন্ডিত শাস্ত্রী যে পদটির অর্থ করেছেন পন্ডিত সিলভ্যাঁলেভি তার অন্য
অর্থ করেছেন। সিলভ্যাঁলেভির ব্যাখ্যা অনুসারে “এতদিন যারা দেবতার সঙ্গে অমিশ্রিত ছিল তিনি
তাদের মিশ্রিত করেছেন।” ধর্মমহাপাত্র কেবল অশোকের নীতিগুলি তত্ত্বাবধান বা প্রয়োগ ঘটাতেন তাই নয়, তারা
ব্রাহ্মণদের প্রতি উদারতা প্রদর্শন এবং যবন, কম্বোজ, গন্ধার, ব্রাহ্মণ ও
অন্যান্য সম্প্রদায়ের উন্নতিবিধান, মৃত্যুদণ্ডের সংশোধন প্রভৃতি করতে এই পদে ব্রাহ্মণরা
নিযুক্ত হতে পারত। ‘দন্ড সমতা’ ও ‘ব্যবহার সমতা’ অর্থ পন্ডিত শাস্ত্রী যা করেছেন তা নাও হতে পারে, এর অর্থ হতে পারে সমগ্র সাম্রাজ্যে একই দণ্ড ও আইনের প্রচলন। ব্রাহ্মণদের মৃত্যুদণ্ড বা ওই জাতীয় শাস্তি দেওয়া হয় তার
প্রমান কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র থেকে পাওয়া যায়। পুষ্যমিত্র শুঙ্গ বৌদ্ধ বিদ্বেষী ও ব্রাহ্মণ বিদ্রোহের নেতা ছিলেন এবং তিনি
মৌর্য সম্রাট বৃহদ্রথের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণদের নেতৃত্ব দেন এমন প্রমাণ নেই। পুষ্যমিত্র ভারহুতের বৌদ্ধস্তুপের যে বেষ্টনী তৈরি
করে দেন তা তাঁর বৌদ্ধদের প্রতি শ্রদ্ধার পরিচয় দেয়। এইসকল যুক্তির সাহায্যে ব্রাহ্মণ বিদ্রোহের যুক্তিকে নষ্ট করেছেন।
রুশ গবেষক বনগার্ভ লেভিন ব্রাহ্মণ
বিদ্রোহের তথ্যের ওপর নতুনভাবে আলোকপাত করেন। অশোক তাঁর রাজত্বের শেষদিকে ধর্মসহিষ্ণুতার
নীতি ও সকল ধর্মের প্রতি সমান আচরণের নীতি থেকে বিচ্যুত হন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি গোড়া আনুগত্য দেখিয়ে রাজকোষের
সমুদয় অর্থ বৌধ সংগ্ঘরাম ও বিহারে দান করা শুরু করেন, এজন্য তিনি ব্রাহ্মণদের রোষে পড়েছিলেন।
হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী ও আরও অনেক ঐতিহাসিক মৌর্য
সাম্রাজ্যের পতনে কতগুলি যুক্তি প্রদর্শন করে অশোকের দায়িত্বকে অস্বীকার করেছেন। অশোকের অহিংসা ও ধর্মবিজয় নীতি মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের
জন্য বাস্তবিক ভাবে দায়ী ছিল। মগধের শাসকদের চিরাচরিত
দিগ্বিজয়ী আদর্শ অনুসরণ করেছিলেন, ফলে সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব রক্ষার পক্ষে তার
ফল হয়েছিল অশুভ। সাম্রাজ্যের শাসন ব্যবস্থায়
শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। প্রাদেশিক শাসনকর্তারা স্বেচ্ছাচারী ও
বিদ্রোহী হয়ে ওঠে, অশোক ও তাঁর বংশধররা যা দমন করতে পারেনি। দিব্যবদানে এই দুষ্ট অমাত্যদের অত্যাচারের কাহিনী জানা যায়। ডঃ রায়চৌধুরী অশোকের
অহিংস নীতি গ্রহণের ফলে মৌর্য সাম্রাজ্যের ক্ষাত্রশক্তি নষ্ট হয় বলে মনে করেন। যে সম্রাট বিহারযাত্রা স্থলে ধর্মযাত্রা প্রবর্তন করেন, তাঁর নীতির ফলে সৈন্যদল নিবীর্য হয়ে পড়ে এবং তাদের মনোবল
ভেঙে যায়। উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে তখন ব্যাকট্রিয় গ্রীক আক্রমণের আশঙ্কা
দেখা যায়। এই অবস্থায় ভারতের সিংহাসনে পুরু বা
চন্দ্রগুপ্তের মত যোদ্ধার দরকার ছিল, অশোকের মত ভাববাদী স্বপ্নদ্রষ্টা
সম্রাট সাম্রাজ্য রক্ষায় অপারগ ছিলেন।
ডঃ রায়চৌধুরীর মতকে সম্পূর্ণ নস্যাৎ
করে রোমিলা থাপার বলেন যে, অশোকের অহিংস নীতির ফলে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে একথা
বলা যায় না। তিনি কলিঙ্গ যুদ্ধে লোক নিহত হওয়ায় অনুতপ্ত থাকলেও
কলিঙ্গ বাসীদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়নি। সুতরাং তাঁর অহিংস নীতি ফলে মৌর্য সাম্রাজ্য ভেঙে যায় একথা বলা যায়
না। অশোক যুদ্ধকে ত্যাগ করেছিল যুদ্ধকে ঘৃণা করে নয়, যুদ্ধের প্রয়োজন
ছিল না বলে। ডঃ রোমিলা থাপারের এই মতকে ডঃ নীলকন্ঠ শাস্ত্রী সমর্থন করেছেন। ব্যাসামের মতে অশোক উপজাতিক বিদ্রোহী যথা আটবিকদের বিরুদ্ধে সামরিক
অভিযান না করে জনকল্যাণমূলক কাজ এবং ধর্ম প্রচার করে তাদের সভ্য এবং সাম্রাজ্যের
সঙ্গে সংহতিশীল হতে সাহায্য করে।
ডঃ রায়চৌধুরী প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের বিদ্রোহ মৌর্য
সাম্রাজ্যের পতনের একটি বড় কারণ বলেছেন। বিশাল মৌর্য সাম্রাজ্যের
প্রদেশগুলোতে বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রাজকর্মচারীদের অত্যাচার
হেতু সাম্রাজ্যের অন্তর্নিহিত শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। বিন্দুসারের আমল থেকেই প্রাদেশিক রাজকর্মচারীদের অত্যাচার প্রকট হয়ে উঠেছিল এবং
অশোকের সময় তা বহাল ছিল। তবে অশোক ‘রজুক’ ও ‘মহামাত্রদের’ হাতে এত বেশি
ক্ষমতা দেন যে, তাঁর মৃত্যুর পর তাদের
নিয়ন্ত্রণ করার মত কোন শাসক ছিল না। উত্তর-পশ্চিমে সুভাগসেন, মধ্যপ্রদেশের
বীরসেন স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন। অশোকের উত্তরাধিকারীরা তাঁর মত যোগ্যতা সম্পন্ন ছিল না এবং
বৃহৎ মৌর্য সাম্রাজ্যকে সুশাসন করার মত যোগ্যতাও তাদের ছিল না। তদুপরি সিংহাসন নিয়ে বিরোধের ফলে মৌর্য সাম্রাজ্য ভাগ হয়ে
যায়। অশোকের বংশধররা সেনাদলের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখায় সেনাদলের আনুগত্য হারিয়ে
ফেলেন, তাদের সেনাপতি পুষ্যমিত্র শুঙ্গ এর পুরো সুযোগ
নেয়।
মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের জন্য প্রকৃতিগত ত্রুটির প্রতি
আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ডঃ রোমিলা থাপার। কোনো সাম্রাজ্যের
অস্তিত্ব রক্ষায় একটি বড় ভূমিকা পালন করে সুশাসন ব্যবস্থা। মৌর্য শাসন
ব্যবস্থা অতি মাত্রায় কেন্দ্রীভূত ছিল, এই কেন্দ্রীভূত শাসন ব্যবস্থায় প্রকৃতপক্ষে সকল ক্ষমতার শীর্ষে বিরাজ করতেন সম্রাট
স্বয়ং। রাষ্ট্রের পরিবর্তে ব্যক্তিগতভাবেই রাজার প্রতি
আনুগত্য থাকার ফলে শাসক দুর্বল হলে প্রজাদের আনুগত্য থেকেও তিনি বঞ্চিত হতেন। অশোকের পরবর্তী সময় প্রশাসকদের
ক্ষেত্রে যেটা দেখা যায়। সম্রাটকে কেন্দ্র করে মৌর্য
শাসন ব্যবস্থায় একটা দক্ষ আমলাতন্ত্র গড়ে উঠেছিল। যারা প্রজাবর্গের ন্যায় কেবল রাজার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতেন। স্বাভাবিকভাবেই রাজার পরিবর্তনের সাথে সাথে কর্মচারীদের
আনুগত্যের পরিবর্তন ঘটে। জনসাধারণের মতামত প্রকাশের কোনো
অধিকার ছিল না, গণ রাজ্যগুলির ধ্বংসের ফলে মৌর্য যুগে লোকেদের
মধ্যে রাষ্ট্র চেতনা ছিল না এবং মৌর্য সম্রাটরা জনমানসকে গ্রহণ করে রাষ্ট্র চেতনা বাড়াবার
কোনো চেষ্টা করেননি।
অশোক তাঁর জনকল্যাণ প্রকল্প এবং স্তম্ভ নির্মাণের জন্য রাজকোষের বিরাট অর্থ ব্যয় করেন। কোশাম্বীর মতে অর্থনীতির সংকট
ঘটেছিল তার প্রমাণ পরবর্তী মৌর্য রাজাদের মুদ্রায় খাদের পরিমাণ বৃদ্ধির
বিষয়ে থেকে প্রতীয়মান হয়। বিশাল সংখ্যক কর্মচারীদের বেতন
দিতে গিয়ে রাজকোষে টান পড়ে, শেষের দিকে মৌর্য শাসকদের। কোশাম্বীর এই
বক্তব্যকে ডি এন ঝা স্বীকার করেন। রোমিলা থাপার মৌর্য যুগের অর্থনৈতিক সংকটের
পেছনে একাধিক কারণ ছিল বলে উল্লেখ করেছেন। বিশাল সংখ্যক সৈন্যদের ব্যয়ভার ও সরকারি কর্মচারীদের বেতন প্রদান করতে গিয়ে
রাজকোষ প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়ে। মৌর্য অর্থনীতির একটা বড় উৎস ছিল গাঙ্গেয় সমভূমির কৃষি। এই কৃষিনির্ভর অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে সমগ্র সাম্রাজ্যের
ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব ছিল না। অশোকের রাজত্বকালের মধ্যবর্তী সময়
থেকে যে আর্থিক সংকট শুরু হয়েছিল পরবর্তী শাসকদের সময় প্রকট রূপ ধারণ করে।
মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনে
গণবিদ্রোহের কথা উল্লেখ করেছেন নীহাররঞ্জন রায়। এই বিদ্রোহ ছিল মৌর্য সম্রাটগণ কতৃক বিদেশি ভাবধারা
গ্রহণ এবং অত্যাধিক করভার আরোপের বিরুদ্ধে। মেগাস্থিনিসের মতে করের পরিমাণ
ছিল উৎপন্ন ফসলের এক-চতুর্থাংশ।
পরিশেষে বলতে পারি যে, মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনে কোন একটি বিশেষ তত্ত্ব এব্যাপারে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। এই
সাম্রাজ্যের পতনে বিদেশি আক্রমণ বা চাপের তুলনায় অভ্যন্তরীন সংকট ছিল অনেকাংশা দায়ী। অশোকের নীতির ফলে মৌর্য সাম্রাজ্যের যে ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল
তা প্রতিরোধ করা পরবর্তী শাসকদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। ফলে অশোকের মৃত্যুর ২৫ বছরের পর সীমান্ত দিয়ে
ব্যাকট্রিয় গ্রীকরা ভারতে প্রবেশ করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন